সিঙ্গাপুর ভ্রমণ – কোথায় কোথায় ঘুরবেন?
ছোট্ট একটা দেশ সিঙ্গাপুর, কিন্তু ট্রাভেলারদের জন্য স্বপ্নের মত! এই ছোট্ট দেশ মোটামুটি ভাবে ঘুরতেও আপনার প্রায় এক সপ্তাহ লেগে যাবে। অথবা সিঙ্গাপুর শহরের স্কাই ভিউ দেখতে চাইলে সিঙ্গাপুর ফ্লায়ার নামক নাগরদোলায় উঠে যেতে পারেন। আপনি সিঙ্গাপুর ভ্রমণের প্ল্যান করছেন? তাহলে এই সিঙ্গাপুর ভ্রমণ গাইড আপনার অবশ্যই কাজে আসবে।
১। সিঙ্গাপুর চাঙ্গি এয়ারপোর্ট

হেডিং দেখে হয়তো ভাবছেন একটা এয়ারপোর্ট কিভাবে টুরিস্ট স্পট হয়! এটাই সত্যি। সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি এয়ারপোর্ট বিশ্বের অন্যতম সুন্দর এয়ারপোর্টের একটি। কি নেই এইখানে? ফ্রি মুভি থিয়েটার, ফুট-বডি ম্যাসাজ চেয়ার, গেমিং জোন, কই মাছে পুকুর, অর্কিড বাগান, সূর্যমুখী বাগান, সুইমিং পুল, শপিং সেন্টার, স্ট্রিট ফুড সহ আরো অনেক কিছু। তবে সবচাইতে আকর্ষণীয় স্পট হলো জুয়েল চাঙ্গি (Jewel Changi). জুয়েল সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের নতুন এবং বিস্ময়কর এক আবিস্কার। এইখানে প্রায় ৫০ মিটার উচ্চতার ভোরটেক্স জলপ্রপাত আছে।
অনেক প্যাসেঞ্জার সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সে ফ্লাই করেন শুধুমাত্র যাতে সিঙ্গাপুর এয়ারপোর্টে ট্রানজিট হয় এবং ঘুরে দেখতে পারেন। আপনি সিঙ্গাপুর যাবার অথবা রিটার্ন করার সময় হাতে সময় রেখে পুরো এয়ারপোর্ট ঘুরে দেখতে পারেন। শুধু সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি এয়ারপোর্ট নিয়ে আমার একটি আর্টিকেল আছে। পড়তে এইখানে ক্লিক করুন।
২। মেরিনা বে

সিঙ্গাপুরের ফ্রি একটিভিটিস এর মধ্যে মেরিনা বে ঘুরে বেড়ানো অন্যতম। মেরিনা বে হলো উপসাগরের সাথে লাগোয়া প্রায় ৩.৫ কিলোমিটার লম্বা ওয়াকওয়ে বা হাঁটার জায়গা। এইখানে আপনি হেলিক্স ব্রিজ (Helix Bridge), মেরিনা বে স্যান্ডস, সিঙ্গাপুর ফ্লায়ার (Singapore Flyer) সহ সমুদ্র তীরের অপার্থিব সৌন্দর্য দেখতে পারবেন। সন্ধ্যার পর এইখানে পানির ফোয়ারাসহ লাইট শো হয় যা সবার জন্য উন্মুক্ত। এই ওয়াটার আর লাইট শো, এশিয়ার মধ্যে বিখ্যাত।
মেরিনা বে স্যান্ডস হলো ৫৭ তলা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক রিসোর্ট কমপ্লেক্স যেখানে দুনিয়ার তাবত ব্র্যান্ডের দোকান, আইস স্কেটিং, মুভি থিয়েটার, ফুড কোর্ট, ক্যাসিনো কি নেই! এইখানে আরো আছে আর্ট-সাইন্স মিউজিয়াম এবং মেরিনা বে স্কাইপার্ক যেখান থেকে পুরো সিঙ্গাপুরের ভিউ এক নজরে দেখা যায়। আর হেলিক্স ব্রিজ দিয়ে মেরিনা সেন্টার এবং মেরিনা সাউথ কানেক্ট করা হয়েছে। লিটল ইন্ডিয়া অথবা চায়না টাউন থেকে ট্যাক্সি নিয়ে ১০ মিনিটেই মেরিনা বে আসতে পারবেন।
৩। অর্চারড রোড (ORCHARD ROAD) – শপিং এর রাজ্য

অর্চারড রোড প্রায় ২.২ কিলোমিটার লম্বা একটি রাস্তা যার দুপাশ ঝলমলে শপিং মল, রেস্টুরেন্ট আর হোটেল দিয়ে পরিপূর্ণ। এইখানে ION Orchard, প্যারাগন, প্লাজা সিঙ্গাপুর, অর্চারড সেন্ট্রাল নামে বেশ কিছু শপিং মল আছে। আপনি যদি শপিং করতে না চান তাহলে শুধুমাত্র সিঙ্গাপুর কি পরিমাণ ঝলমলে আর আধুনিক তা দেখতেও অর্চারড রোড ঘুরে আসবেন। সত্যি বলতে কি সিঙ্গাপুরের যেখানে হাঁটবেন সেইখানেই ভালো লাগবে।
৪। সিঙ্গাপুর ডাউনটাউন ঘুরুন বামবোট (bumboat) দিয়ে
সিঙ্গাপুরে বামবোট বলতে ছোট নৌকা বা জল ট্যাক্সি বোঝায় যা দ্রুত পরিবহন এবং নদী ভ্রমণে ব্যবহৃত হয়। এই বামবোটগুলোর মুখ ও চোখ দিয়ে আঁকা হয়। সিঙ্গাপুরে টুরিস্টদের জন্য দুইটি বামবোট সার্ভিস কোম্পানি আছে – সিঙ্গাপুর রিভার ক্রুজ এবং সিঙ্গাপুর রিভার এক্সপ্লোরার। নদীতে ঘুরতে ঘুরতে সিঙ্গাপুর শহর দেখতে চাইলে এই রিভার ক্রুজ আপনার জন্য মাস্ট।
৪০ মিনিটের রিভার ক্রুজের জন্য প্রতি এডাল্টের ২৫ সিঙ্গাপুরি ডলার খরচ করতে হবে।
৫। গার্ডেনস বাই দ্যা বে (GARDENS BY THE BAY)
গার্ডেনস বাই দ্যা বে হলো ১০১ হেক্টর জায়গা জুড়ে অবস্থিত বিশাল এক বাগান যেখানে প্রকৃতি এবং প্রযুক্তির এক অপূর্ব মেলবন্ধন হয়েছে। পার্কটি তিনটি প্রধান বিভাগে বিভক্ত – বে সাউথ গার্ডেন, বে ইস্ট গার্ডেন এবং বে সেন্ট্রাল গার্ডেন। ২০১২ সালে উদ্বোধনের পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ মিলিয়ন পর্যটক এই বাগান ঘুরতে এসেছে। সিঙ্গাপুর ঘুরতে এসেছেন, কিন্তু গার্ডেনস বাই দ্যা বে ঘুরেননি, এমন টুরিস্ট খুঁজে পাওয়া যাবেনা।
এইখানে ফুলের গম্বুজ, ক্লাউড ফরেস্টের মধ্যে আপনি নিমেসে হারিয়ে যেতে পারেন। এইখানে বাগানের মাঝে হাটতে গিয়ে এতই মুগ্ধ হবেন যে পুরোটা দিন কাটিয়ে দিতে পারবেন। এই বাগান ভোর ৫ টা থেকে মধ্যরাত ২ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। প্রতিজনের প্রবেশ মূল্য ২৮ মার্কিন ডলারের মোট। তবে booking.com সহ বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ডিসকাউন্ট দিয়ে আরো কমে পেতে পারেন।
৬। মেরিনা বে স্যান্ডস স্কাই পার্ক
পুরো সিঙ্গাপুর শহর পাখির চোখে দেখতে চাইলে মেরিনা বে স্যান্ডস স্কাই পার্ক এ আপনাকে যেতেই হবে। ৫৭ তলার উপর থেকে সিঙ্গাপুর শহরের অসাধারণ ভিউ এবং মেরিনা বে তে পরিচালিত Wonder Full লাইট এবং ওয়াটার শো এর খুব ভালো ভিউ পাবেন এইখান থেকে।
স্কাই পার্ক সবুজ গাছপালা, সুইমিং পুল এবং রেস্টুরেন্ট দিয়ে বেষ্টিত। যদিও রেস্টুরেন্ট বাদে অবজারভেশন ডেক বা পুলে যেতে ২৩ সিঙ্গাপুর ডলার গুণতে হবে। স্কাই পার্ক হোটেল গেস্টেদের জন্য ফ্রি।
৭। সিঙ্গাপুর ফ্লায়ার (Singapore Flyer)
নাগরদোলার সাথে আমরা সবাই পরিচিত। কিন্তু আমি হলফ করে বলতে পারি এত আধুনিক নাগরদোলা আপনি আগে কখনো দেখেননি বা চড়েননি। সিঙ্গাপুর শহর যদি পাখির চোখে উপর থেকে দেখতে চান তাহলে সিঙ্গাপুর ফ্লায়ার মিস করবেন না। সিঙ্গাপুর ফ্লায়ার মূলত একটি পর্যবেক্ষণ চাকা যা মূলত ১৬৫ মিটার উঁচু। এটি এশিয়ার সবচাইতে উঁচু নাগরদোলা। এইখানে প্রবেশের সময় অসাধারণ মিউজিয়ামের মত জায়গা আছে, যেখানে আপনি সিঙ্গাপুরের ইতিহাস, বিবর্তন এবং অন্যান্য বিষয়ে জানতে পারবেন।
আপনার সিটি ট্যুরের মাঝে এই জায়গা অবশ্যই লিস্টে রাখবেন। এইখান থেকে আপনি ফর্মুলা ওয়ানের রেস ট্রেক, আকাশছোঁয়া দালান, উপদ্বীপ, গার্ডেনস বাই দ্যা বে সহ মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার সীমারেখাও দেখতে পাবেন। সিঙ্গাপুর ফ্লায়ারের প্রবেশমূল্য প্রতি এডাল্ট ৩৩ সিঙ্গাপুরি ডলার এবং বাচ্চাদের জন্য ২১ সিঙ্গাপুরি ডলার।
৮। ইউনিভার্সাল স্টুডিও (Universal Studio Singapore)

ইউনিভার্সাল স্টুডিও সিঙ্গাপুরের সবচাইতে রোমাঞ্চকর জায়গা সেন্তোসা আইল্যান্ডে অবস্থিত (Sentosa Island)। এটা পরিবার অথবা বন্ধুদের সাথে ঘুরার জন্য সেরা একটি জায়গা। ইউনিভার্সাল স্টুডিও নিয়ে যদি আপনার আইডিয়া না থাকে তাহলে বলে রাখি, এটি জগতজুড়ে নামকরা থিম পার্ক যা জনপ্রিয় সব কার্টুন এবং মুভির আদলে তৈরি। অনেকটা ডিজনি ওয়ার্ল্ডের মত। এইখানে আছে সাই-ফাই সিটি, প্রাচীন মিশর অঞ্চল, ডায়নোসরদের হারিয়ে যাওয়া ওয়ার্ল্ড, হ্যারি পর্টারের হগওয়ার্টস বা জাদুর স্কুল যাবার সেই ট্রেন, বিখ্যাত মুভি ট্রান্সফরমার (Transformer) সিটিসহ অনেক কিছু। এবং সবখানেই আছে মজাদার সব রাইড, যার অনেকগুলোই থ্রিডি। এইখানে প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের শো এবং স্ট্রিট পারফর্মেন্স ও হয়।
ইউনিভার্সাল স্টুডিওর টিকেট প্রকারভেদে বাংলা টাকায় ৪ থেকে ৬ হাজার পর্যন্ত হতে পারে। এর মধ্যে আপনি এন্ট্রি সহ আপনি সব রাইড আনলিমিটেড পাবেন। কিছু টিকেটে লাঞ্চ ও যুক্ত থাকে।
৯। বোটানিক গার্ডেন

সিঙ্গাপুর ভ্রমণ এ যদি আপনি সবুজ প্রকৃতির মধ্যে থেকে সতেজ হতে চান তাহলে গার্ডেন বাই দ্যা বে এর পাশাপাশি আরেকটা জায়গা আছে। সেইটা হলো বোটানিক গার্ডেন (Botanic Garden)। এটি সিঙ্গাপুরের প্রথম ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট যা স্থানীয় ও বিরল প্রজাতির গাছ নিয়ে ভরপুর। এইখানে ছোট অনেকগুলো লেক আছে যেগুলো শাপলা, হাঁস ও রাজহাঁস দিয়ে ভর্তি থাকে। এইখানে আপনি সিঙ্গাপুরের জাতীয় ফুল অর্কিডের বাগান পাবেন। ব্যাস্ততম শহরের যান্ত্রিক ট্যুর থেকে একটু রিল্যাক্স হতে বোটানিক গার্ডেন ঘুরে আসতে পারেন।
এই বাগানের কোন এন্ট্রি ফি নেই, তবে অর্কিড বাগান ঘুরতে চাইলে মাত্র ৫ সিঙ্গাপুর ডলার খরচ করলেই চলবে।
১০। সিঙ্গাপুর চিড়িয়াখানা (Singapore Zoo)

অনেকেই ভাবেন যে চিড়িয়াখানা তে দেখার আহামরি কি আছে? তবে আমি বলবো আপনার সিঙ্গাপুর ভ্রমণ প্ল্যানে সিঙ্গাপুর চিড়িয়াখানা না রাখলে আপনি অনেক কিছু মিস করবেন। আর আপনার ট্যুর যদি হয় ফ্যামিলি সহ তাহলে আপনার লিস্টে এটি রাখা অনেকটা বাধ্যতামূলক। এইখানে জেব্রা, জিরাফ, কোয়ালা (Koalas), সাদা বাঘ সহ প্রায় ৩০০ প্রজাতির বেশি জীব জন্তু আছে। এই চিড়িয়াখানা সব ধরনের জীব জন্তুর অভয় আশ্রম। যেমন এইখানের ফ্রোজেন সেকশনে (Frozen Tundra) আপনি পোলার বিয়ার, রেকুন কুকুর যেমন দেখতে পাবেন, ভঙ্গুর বনে (Fragile Forest) দেখতে পাবেন অনেক পোকামাকড় এবং বিটল, যা উড়ন্ত শিয়াল নামেও পরিচিত। প্রাইমেট কিংডম এ আপনি জাভা ল্যাঙ্গুর (Java Langurs) সহ সিংহ লেজযুক্ত ম্যাকাও দেখতে পাবেন। এইগুলো হলো রেগুলার জীব জন্তুর পাশাপাশি বিরল প্রজাতি যেগুলো আমরা সচরাচর চিড়িয়াখানায় দেখিনা।
এইখানে সাফারি শো, নাইট সাফারি, ওরাং ওটাং শো, বোট সাফারি ট্রিপ, জঙ্গল ব্রেকফাস্ট সহ করার মত অনেক এডভেঞ্চার একটিভিটি আছে। প্রবেশমূল্য প্রতি এডাল্ট ৩৭ সিঙ্গাপুর ডলার, প্রতি চাইল্ড ২৫ সিঙ্গাপুর ডলার।
১১। লিটল ইন্ডিয়া এবং আরব স্ট্রিট

আরব স্ট্রিট নাম শুনেই বুঝতে পারছেন এই এলাকা আরব্য রজনীর ডিজাইনে সাজানো। এইখানে অনেক ঐতিহাসিক পুরনো মসজিদ, এরাবিয়ান খাবার দাবারের অনেক স্টল, এবং পুরনো আমলের দালানকোঠা। পুরনো ঐতিহ্য কিভাবে সংরক্ষণ করতে হয় তা আমাদের সিঙ্গাপুর থেকে শিখা উচিত। ছোট ছোট সুভেনির শপ, খাঁটি আরবীয় খাবার আপনাকে অন্য জগতে নিয়ে যাবে।
উপনিবেশিক আমলে সিঙ্গাপুরে এক সময় ভারতীয় সম্প্রদায় ছিল যা এখনো আছে। আরব স্ট্রিট এর মত লিটল ইন্ডিয়া শপিং এবং খাওয়া দাওয়ার জন্য দুর্দান্ত জায়গা। এবং আপনি কম খরচে হোটেল ঠিক করতে চাইলে লিটল ইন্ডিয়া বেস্ট জায়গা। এইখানে সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে বড় এবং বিখ্যাত হিন্দু মন্দির ( Sri Veeramakaliamman Temple) অবস্থিত।
১২। চায়না টাউন
আমেরিকা, ব্রিটেন থেকে শুরু করে সবখানেই চায়না টাউন আছে। সিঙ্গাপুর ও তার ব্যাতিক্রম না। এইখানে শ্রী মারিয়াম্মান মন্দির (Sri Mariamman Hindu temple) এবং বুদ্ধ টুথ রেলিক মন্দির (Buddha Tooth Relic temple) আছে যার দৃষ্টিনন্দন স্থাপনাশৈলী আপনার নজর কাড়বে। এছাড়াও এইখানে Thian Hock Keng নামে পুরনো চাইনিজ মন্দির আছে যা ১৮২০ সালে স্থাপিত হয়।
চায়না টাউন ভিজিট ছাড়া আপনার সিঙ্গাপুর ভ্রমণ পরিপূর্ণ হবেনা। এই জায়গা অথেনটিক চাইনিজ খাবারের দোকান, উজ্জ্বল লাল ফানুস, চাইনিজ ট্র্যাডিশনাল পণ্য দিয়ে ভরপুর। এইখানে এসে আপনি মনে করতেই পারেন যে আপনি চায়নাতে আছেন।
১৩। সি একুরিয়াম (SEA Aquarium)

সি একুরিয়ামটি সেন্তোসা দ্বীপে অবস্থিত। এইটি ফ্যামিলি নিয়ে ঘুরার জন্য পারফেক্ট প্লেস। এইখানে প্রায় ১০ লক্ষেরও বেশি সামুদ্রিক মাছ এবং জীব আছে। স্টিং রে, হাঙর, বোতলজাতীয় ডলফিন, বিভিন্ন প্রজাতির কচ্ছপ এবং কোরাল রিফের মতো সামুদ্রিক জীবের জীবনযাপন নিয়ে তুলনাহীন অভিজ্ঞতা পাবেন এইখানে। এছাড়া একুরিয়ামের দুর্দান্ত সামুদ্রিক জীবন ছাড়াও এইখানে অন্যান্য আকর্ষণীয় শো এর ব্যবস্থা আছে।
আপনি ডলফিন দ্বীপে ডলফিনের সাথে একটি ইন্টারেক্টিভ সেশন করতে পারেন, এছাড়া হাঙর, স্টিং রে সহ সমুদ্রের হিংস্র শিকারিদের আবাসস্থলে ডুব দিতে পারেন। মোট কথা আপনার সিঙ্গাপুর ভ্রমণ এ অসাধারণ অভিজ্ঞতা এনে দিবে এই সি একুরিয়াম। প্রবেশমূল্য প্রতি এডাল্ট ৪১ এবং প্রতি চাইল্ড ৩০ সিঙ্গাপুর ডলার। আপনি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ডিসকাউন্টে পেতে পারেন।
১৪। সেন্তোসা আইল্যান্ড (Sentosa Island)

যখন আমরা কোথাও বেড়াতে যাই, আমাদের মাথায় একটা জিনিস প্রায়ই আসে। আমরা যদি সব ঘুরাঘুরির জায়গা একসাথে পেতাম কত ভালো হত! তেমন একটি জায়গা সেন্তোসা দ্বীপ! ৪.৭০ কিলোমিটারের এই ছোট্ট একটু দ্বীপে সিঙ্গাপুর কি বানিয়ে রেখেছে দেখলে আশ্চর্যান্বিত হতে হয়। সি একুরিয়াম, ইউনিভার্সাল স্টুডিও এই আইল্যান্ডে অবস্থিত। এইখানে আপনি সিলোসো বিচে (Siloso Beach) খালি পায়ে হেঁটে পা ভেজাতে পারেন। এইখানে আপনি ফ্রি ভলিবল কোর্টে ভলিবল খেলতে পারেন, অথবা কায়াকিং বা স্কিম বোর্ডিং করতে পারেন।
সিঙ্গাপুরের বিখ্যাত মূর্তি, মারলিয়ন এই দ্বীপে অবস্থিত। মুখ সিংহের এবং নিচে মাছের লেজের এই মূর্তি, যার মুখ দিয়ে পানি বের হচ্ছে, এই মূর্তি টিভিতে, ক্যালেন্ডারে অহরহ দেখেছেন। সেন্তোসা দুর্গ ঘুরে আসতে পারেন যা দেশের একমাত্র সংরক্ষিত দুর্গ। সিঙ্গাপুরের ট্রিক আই মিউজিয়ামটি এইখানে অবস্থিত। অবাক হচ্ছেন? ৪.৭০ কিঃ মিঃ এর ছোট্ট একটা দ্বীপে এত কিছু কিভাবে!
১৫। চাঙ্গি জাদুঘর (Changi Museum)
চাঙ্গি জাদুঘরটি সিঙ্গাপুরের অন্যতম জনপ্রিয় জাদুঘর। এইখানে আপনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যারা জাপানি দখলে আক্রান্ত হয়েছিল তাদের গল্প সম্পর্কে জানতে পারবেন। জাদুঘরটি তার চিঠিপত্র, ছবি এবং ড্রয়িং এর মাধ্যমে এক একটি গল্প বর্ণনা করে। জাদুঘরটি মাঝখানে একটি চ্যাপেল এবং উপহারের দোকানসহ পাঁচটি ভাগে বিভক্ত। চাঙ্গি মিউজিয়ামের আশেপাশে অডিও গাইড ভ্রমণ করতে পারবেন। সিঙ্গাপুর ভ্রমণ এর সময় আরো কিছু জাদুঘর ঘুরে আসতে পারেন। সেগুলো হলো – লি কং চিয়ান প্রাকৃতিক ইতিহাস জাদুঘর, সান ইয়াত সেন মেমোরিয়াল হল এবং সিঙ্গাপুরের জাতীয় জাদুঘর। চাঙ্গি জাদুঘরের এন্ট্রি ফি ১২ সিঙ্গাপুরি ডলার।
এইগুলো ছাড়াও চাঙ্গি বিচ, পুংগোল ওয়াটার ওয়ে পার্ক (Punggol Waterway Park), পুলাউ উবিন দ্বীপ (Pulau Ubin) সহ আরো অনে স্পট আপনার সিঙ্গাপুর ভ্রমণ লিস্টে রাখতে পারেন। হানিমুন হোক, ফ্যামিলি ট্রিপ হোক কিংবা বন্ধু বান্ধব সহ হোক, সিঙ্গাপুর ভ্রমণ না করে থাকলে এখুনি প্ল্যান করে ফেলুন।
Original Article By Admin Marwan from AirinfoBD.com. Please do not copy paste anywhere without permission & courtesy.