সফলতার সপ্তম বছরে ইউএস-বাংলা
সপ্তম বছরে পা দিল ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই ইউএস-বাংলা বাংলাদেশের বিমান পরিবহন শিল্পে যাত্রা শুরু করে একের পর এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে, অর্জন করেছে সাফল্যের মাইলফলক।
বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের প্রতিযোগিতামূলক এভিয়েশন ব্যবসায় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স যাত্রা শুরু করেছিল ৭৬ আসনবিশিষ্ট দুটি ড্যাশ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট দিয়ে ঢাকা-যশোর ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে। শুরু থেকেই নিজস্ব ক্যাটারিংসহ অন-টাইম ফ্লাইট পরিচালনা, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ইন-ফ্লাইট সার্ভিস, যা যাত্রী সাধারণের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে।
যাত্রা শুরুর এক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সকল বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা ফ্লাইট পরিচালনা করে অল্প সময়ে আকাশ পথের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে করেছে সুদৃঢ়। অভ্যন্তরীণ রুট ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর, বরিশাল ও রাজশাহীতে ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স যাত্রা শুরুর দুই বছরের মধ্যে ২০১৬ সালের ১৫ মে ঢাকা-কাঠমান্ডু রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মধ্যেমে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে ঢাকা থেকে কলকাতা, চেন্নাই, মাস্কাট, দোহা, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক ও গুয়াংজু রুটে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করে আসছে। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে কলকাতা, চেন্নাই, মাস্কাট ও দোহা রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। নিকট ভবিষ্যতে আবুধাবি, জেদ্দা, রিয়াদ, দাম্মাম, দুবাই, হংকং, দিল্লি রুটে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা নিয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।
বর্তমানে ইউএস-বাংলার বিমান বহরে মোট ১৩টি এয়ারক্রাফট রয়েছে, যার মধ্যে ১৬৪ আসনের চারটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০, ৭২ আসনের ৬টি ব্র্যান্ডনিউ এটিআর ৭২-৬০০ এবং ৭৬ আসনের তিনটি ড্যাশ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট আছে। যাত্রা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৯৮.৭% অন-টাইম ফ্লাইট পরিচালনার রেকর্ড রয়েছে ইউএস-বাংলার।
যাত্রীসেবার অনন্য নজির স্থাপন করায় স্বীকৃতিস্বরূপ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স অভ্যন্তরীণ রুটে অন-টাইম পারফরম্যান্সে সেরাসহ ধারাবাহিকভাবে সেরা এয়ারলাইন্সের মুকুট অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। দেশে-বিদেশে বর্তমানে প্রায় ১৪০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী আছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে, যা দেশের বেকার সমস্যা সমাধানেও কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া নিয়মিত ট্যাক্স-সারচার্জ পরিশোধ করে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখেছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করে চলেছে। বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনীতিকে করছে আরও সুদৃঢ়।
ইউএস-বাংলার টিকিট সংগ্রহের জন্য রয়েছে ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপ বুকিং সুবিধা। রয়েছে হোম ডেলিভারি সুবিধাও। সারাদেশে নিজস্ব ৩০টির অধিক সেলস অফিস রয়েছে। এছাড়া কলকাতা, চেন্নাই, মাস্কাট, দোহা, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, গুয়াংজু, টরেন্টো, নিউইয়র্কে নিজস্ব সেলস অফিস আছে। ফ্রিকোয়েন্ট ফ্লাইয়ারদের জন্য রয়েছে স্কাইস্টার প্যাকেজ। যার মাধ্যমে শুধু টিকিটেই সুবিধা পাবে না, বরং যাত্রীরা বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের পণ্য ক্রয়ে ছাড়ও পেয়ে থাকে।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইউএস-বাংলা জানায়, স্বাধীনতার পর ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স-ই একমাত্র দেশীয় বিমান সংস্থা, যা চীনের কোনো গন্তব্যে বা ভারতের চেন্নাইয়ে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যাত্রীদেরকে বেশ কয়েকটি স্পেশাল সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা, যা এভিয়েশন শিল্পে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
উল্লেখযোগ্য সার্ভিসগুলোর মধ্যে রয়েছে- আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অবতরণের পর ১৫ মিনিটে লাগেজ ডেলিভারি, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য ২০%, সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা ও গলফারদের জন্য ১০% মূল্যছাড়সহ আরও নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স শুধু যাত্রীই পরিবহন করে না, সেঙ্গে বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক গন্তব্যে কার্গো পরিবহন করে থাকে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স দেশের বিভিন্ন শিক্ষা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন খেলাধুলার উন্নয়নের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে আছে।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল-মামুন ৭ম বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে বলেন, প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে আমরা যেকোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। বর্তমান বিশ্বে যাত্রীদের সঠিক সেবা প্রদান করার জন্য ব্র্যান্ডনিউ এয়ারক্রাফটের কোনো বিকল্প নেই। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স যাত্রীদের আরামদায়ক সেবাকে নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই প্রতিনিয়ত নতুন নতুন এয়ারক্রাফট বহরে যুক্ত করে চলেছে।
তিনি আরও বলেন, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সই একমাত্র দেশীয় বিমান সংস্থা, যারা অভ্যন্তরীণ রুটে ব্র্যান্ডনিউ এয়ারক্রাফট দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। নিকট ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক রুটেও ব্র্যান্ডনিউ এয়ারক্রাফট বহরে যুক্ত করার পরিকল্পনা করছি। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পেরে ইউএস-বাংলা পরিবার অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত।
ইউএস-বাংলার সাফল্যে ভরা ৬ বছরের সাথে যেসব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্ট, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, বিভিন্ন করপোরেট অফিস, বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক, অনলাইন মিডিয়ার কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ, সর্বোপরি প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন, তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন আবদুল্লাহ আল-মামুন।