বন্ধ হলো বিমানের সিঙ্গাপুর আবুধাবী ও দুবাইগামী সব ফ্লাইট
একদিনে বন্ধ হলো বিমানের সিঙ্গাপুর, আবুধাবী ও দুবাইগামী সব ফ্লাইট। বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ হয়েছে দুবাই ও আবুধাবী গামী সব ফ্লাইট। আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত অব্যাহত থাকবে। এই রুটে বিমান সপ্তাহে ২৮টি ফ্লাইট চালাতো। অপর দিকে আগামী ২১ মার্চ থেকে বন্ধ করা হবে সিঙ্গাপুর গামী সব ফ্লাইট। বাতিলের এই ঘোষনা অব্যাহত থাকবে আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত। এছাড়াও বৃহস্পতিবার বিমানের অভ্যন্তরিন রুটে ৯টি ফ্লাইট বাতিলের ঘোষনা দেয়া হয়েছে। বিমানের এমডি মোকাব্বির হোসেন এভিয়েশন নিউজকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেছেন, বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাস মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ায় সিঙ্গাপুর সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিমান ওই দেশের সঙ্গে ফ্লাইট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আবুধাবী ও দুবাইরের ফ্লাইট বাতিলও একই কারণে নেয়া হয়েছে। তবে অভ্যন্তরিন রুটে ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে যাত্রী সংকটে।
এদিকে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বিদেশ থেকে শাহজালাল আন্তজাতিক বিমানবনরএর যাত্রী আসা অব্যাহত আছে। বৃহস্পতিবারও ঢাকায় অবতরণ করেছে বেশ কয়েকটি বিদেশী ফ্লাইট। এর মধ্যে বিকালে ৪০৬ জন যাত্রী নিয়ে সৌদি আরব থেকে ঢাকায় অবতরণে করেছে সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট।
এরআগে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইতালি থেকে ৯৬ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকায় অবতরণ করেছিল কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট।
কাতারের কিউআর-৬৩৪ ফ্লাইটটি ইতালির ৬৮ জনসহ জার্মানি ও ইউরোপের অন্যান্য দেশের ৯৬ জন যাত্রী নিয়ে গত সোমবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। যদিও ওই দিন দুপুর ১২টা থেকে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়। কিন্তু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে ওই ফ্লাইটকে অবতরণের অনুমতি দেয়া হয়। এ বিষয়ে কাতারের সিভিল এভিয়েশনকেও অসন্তোষপত্র পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেবিচক। এরপর আর কোনো ফ্লাইট কোনোভাবেই নামতে না দেয়ার ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে যায় শাহজালাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তারপরও ইউরোপ থেকে যাত্রী আসা থেমে নেই।
জানাগেছে, মঙ্গলবার দুজনকে পুশব্যাক করে নিজ নিজ দেশে পাঠানো হয়েছে। তাদের একজন যুক্তরাষ্ট্র এবং আরেকজন আইভরি কোস্টের নাগরিক। সরকার ৩১ মার্চ পর্যন্ত অন-অ্যারাইভাল ভিসা বন্ধ করায় এই দুই নাগরিক দেশে এলেও তাদের কাছে কোনো ভিসা ছিল না। তাই তারা যে বিমানে এসেছে সেই বিমানেই তাদের ফেরত পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তৌহিদ উল আহসান।
জানাগেছে, বুধবার দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মোট তিন হাজার ৩৫০ জন যাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে শুধু শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়েই এসেছে এক হাজার ৯৮১ জন। বুধবারও কমপক্ষে সাতজন যাত্রীকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকে দিয়েছে ইমিগ্রেশন পুলিশ। বিমানবন্দর সূত্র জানায়, কিছু যাত্রী যেসব দেশের সঙ্গে বিমান চলাচল চালু আছে সেসব দেশের ট্রানজিট ব্যবহার করে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। টার্কিশ ও কাতার এয়ারলাইনসে এসব যাত্রী দেশে এসেছিল বলে জানা গেছে।
ঢাকার ফ্লাইট বন্ধ করল থাই লায়ন এয়ার
ব্যাংকক থেকে ঢাকা রুটের ফ্লাইট ৪১ দিনের জন্য বাতিল ঘোষণা করেছে থাই লায়ন এয়ার। এয়ারলাইন্সটি সপ্তাহে ৪ দিন ব্যাংককের ডন মিয়াং এয়ারপোর্ট থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রী নিয়ে আসে।
সকালে এক বার্তায় থাই লায়ন এয়ারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এর প্রাদুর্ভাবের কারণে ও সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আগামী ২০ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকা রুটের ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
এয়ারলাইন্সটি জানায়, যেসব যাত্রী টিকিটের তারিখ পরিবর্তন করে এ বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভ্রমণ করবেন, তাদের তারিখ পরিবর্তনের জন্য কোনো ফি দিতে হবে না। এছাড়াও টিকিট কেটেও যদি কেউ ভ্রমণ না করে, তাহলে তার সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দেবে সংস্থাটি। ঢাকা ছাড়াও মুম্বাই, সিঙ্গাপুর, চীন, জাপান, হ্যানয়, তাইপে, কলম্বো, বালি, জাকার্তা, কাঠমান্ডু ও ইয়াংগুন রুটেও ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সব ফ্লাইট বাতিল করেছে এয়ারলাইন্সটি।